শনিবার ২৪ মে ২০২৫ - ০৭:৩৭
বিপ্লবী নেতার বার্তার ভিত্তিতে তলাবাদের শিক্ষা ও চরিত্র গঠনের বিভিন্ন দিক

কোম হাওজার দারসে খারেজের একজন প্রফেসর আয়াতুল্লাহ আলী আকবর সাইফি মাজানদারানি নেতৃস্থানীয় নেতার বার্তার ভিত্তিতে তলাবাদের শিক্ষা ও চরিত্র গঠনের বিভিন্ন দিক ব্যাখ্যা করেছেন।

হাওজা নিউজ রিপোর্ট: কোম হাওজার দারসে খারেজের একজন প্রফেসর আয়াতুল্লাহ আলী আকবর সাইফি মাজানদারানি নেতৃস্থানীয় নেতার বার্তার ভিত্তিতে তলাবাদের শিক্ষা ও চরিত্র গঠনের বিভিন্ন দিক ব্যাখ্যা করেছেন।

KHAMENEI.IR মিডিয়া তাদের "অগ্রগামী ও উৎকর্ষপ্রাপ্ত হাওজাহ" শিরোনামের সিরিজ প্রতিবেদনে এই বিষয়ে একটি বিশদ সাক্ষাৎকার নিয়েছে।

প্রশ্ন: ইসলামি বিপ্লবের নেতা, কোম হাওজা পুনঃপ্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উপলক্ষে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দেওয়া বার্তায় একটি উদ্ভাবনী, প্রগতিশীল, হালনাগাদ, নতুন সমস্যার জবাবদিহিদানকারী, চরিত্রবান, সংগ্রামী এবং বিপ্লবী পরিচয়সম্পন্ন হাওজাহ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেছেন। আপনার মতে, এই উচ্চতর লক্ষ্য কীভাবে বাস্তবায়িত হতে পারে?

উত্তর: আমাদের জানতে হবে যে, এই রূপান্তর কোনো স্লোগান নয়, বরং এটি একটি বাস্তবতা, যা হাওজার বিভিন্ন ক্ষেত্রে এবং সবদিক থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ ও সমন্বিত পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত হতে হবে। যেমন—শিক্ষার পদ্ধতি, গবেষণাধর্মী গ্রন্থ রচনা, ইসলামী প্রশ্নের উত্তর প্রদান, এবং দ্বীনের প্রচার—সব দিকেই রূপান্তর আনতে হবে।

এই রূপান্তরের মূল উদ্দেশ্য হলো হাওজার ফজিলতপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ইসলামি উৎসসমূহের উপর পূর্ণাঙ্গ দখল ও বোঝাপড়া নিশ্চিত করা। কারণ ইসলাম এমন একটি ধর্ম, যেখানে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা নির্ধারিত। অতএব, ইসলামী শাসনের সকল সিদ্ধান্তে হাওজাহর দায়িত্ব হলো কিতাব ও সুন্নাহর বিধান উপস্থাপন করা।

যত গভীরভাবে তলাবারা কিতাব ও সুন্নাহ বোঝে, তত বেশি তারা ইসলামি সমাজ ও শাসনব্যবস্থাকে নবী (সা.) এবং আহলুল বাইতের (আ.) উদ্দেশ্যের দিকে পরিচালিত করতে সক্ষম হবে।

উদাহরণস্বরূপ, যারা তরুণ আলেম ও সরকারে কার্যকর, তাদের যদি ইসলামি জ্ঞানে পূর্ণ দখল থাকে, তাহলে আমরা ইসলামি বিপ্লবের লক্ষ্য দ্রুত অর্জন করতে পারব। কারণ এই জ্ঞান তাদের দ্বীনের প্রচারে ও শাসনব্যবস্থার নীতিমালা নির্ধারণে সহায়তা করে।

প্রশ্ন: নেতার বার্তায় বলা হয়েছে—"পাঠ্যবই এমন হওয়া উচিত যা শিক্ষার্থীকে গবেষণার আগের সময়কালে সহজ ভাষায় বিষয়বস্তু সরবরাহ করে। অতীতের বড় আলেমরা যেমন: আখুন্দ খোরাসানি, শায়খ আবদুল করিম হায়রি, ও সাইয়্যেদ সদরুদ্দীন সদর এই পাঠ্যপুস্তক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন।" আপনার মতে, প্রাথমিক থেকে উচ্চ স্তর পর্যন্ত হাওজাহর পাঠ্যবইয়ে কী কী ত্রুটি রয়েছে?

উত্তর: বর্তমানে হাওজা দুইটি মূল সমস্যার মুখোমুখি:
১. পাঠ্যবই রচনার ক্ষেত্রে ত্রুটি
২. পাঠদানের পদ্ধতিতে ত্রুটি।

প্রথম ত্রুটির সমাধান হলো—পাঠ্যবইগুলো গবেষণাধর্মী কেতাব থেকে শিক্ষনীয় পাঠ্যবইয়ে রূপান্তর করা। যেমন, 'কিফায়াহ' গ্রন্থটি অত্যন্ত জটিল ভাষায় লেখা, যা নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য বোঝা কঠিন। তাই এই বই সহজ ও সরল ভাষায় পুনর্লিখন করা উচিত।

কেউ যদি বলে, "সরলীকরণ করলে বইয়ের গাম্ভীর্য নষ্ট হয়," তবে তা সঠিক নয়। কারণ, যারা বিশুদ্ধ আরবি জানেন, তারা সহজ ভাষায়ও গভীর বিষয়ে লেখতে পারেন, যদি তারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ হন।

আজকের দিনে দেখা যায়, অনেক তলাবা দারস-এ-খারেজে যোগ দিতে প্রস্তুত নয়, কারণ তারা মৌলিক প্রাথমিক জ্ঞান রাখে না। এটা অনেকটা পাঠ্যবইয়ের জটিলতার কারণেই হচ্ছে।

আমি মনে করি, শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিহীনতার একটি বড় কারণ হলো—এই পাঠ্যবইগুলোর ভাষাগত জটিলতা। অতীতে আরও কঠিন বই যেমন ‘মাআলিম’ ছিল, যা ‘উসুলে ফিকহ’ থেকেও কঠিন ছিল।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha